পাবনার সাঁথিয়ায় এলাকাবাসীর নিজ অর্থায়নে উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের ঘুঘুদহ বড়বিলের অনাবাদি কৃষি জমির কচুরিপানা নিধনে/অপসারণে বিষ প্রয়োগ করেছেন এলাকার কৃষকেরা।
শনিবার (২৭ মে) দুপুরে গৌরিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মাস্টারের উপস্থিতিতে কয়েকটি গ্রামের কৃষকেরা এ বিষ প্রয়োগ করেন। এ সময় সরকারিভাবে কচুরিপানা অপসারণের জন্য সহযোগিতা এবং পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী করেন কৃষকেরা।
কৃষকেরা জানান, ঘুঘুদহ বড়বিলে প্রায় ২ হাজার ৮০০ বিঘা জমি আছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০০ বিঘা জমি এ বছর কচুরিপানার কারনে অনাবাদি রয়েছে। তাই শত শত বিঘা জমি আবাদী করতে এলাকার কৃষকেরা বিভিন্ন কৃষকদের নিকট থেকে (যাদের জমি আছে ওই বিলে) চাঁদা তুলে বিষ কিনে জমিতে আজ শনিবার (২৭ মে) ২০টি বিষ প্রয়োগের স্প্রেযন্ত্র দ্বারা প্রায় ১৩০ বিঘা জমিতে কচুরিপানা ও আগাছা নিধনের জন্য বিষ প্রয়োগ করেছেন। বাঁকি এখনও ৩৭০ বিঘা জমিতেও পর্যায়ক্রমে বিষ প্রয়োগ করা হবে বলেও জানান কৃষকেরা। এই বিলে প্রতি বছর অনেক জমি কচুরিপানার কারনে অনাবাদি থাকে বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী কৃষকেরা।
ঘুঘুদহ গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক জানান,‘এই বিলে আমার আড়াই বিঘা জমির মধ্যে দুই বিঘা জমিই কচুরিপানার কারনে অনাবাদি রয়েছে। আবাদ করতে না পারায় অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে। সরকারিভাবে কচুরিপানা অপসারণ করা হলে আমার মত অনেক ক্ষুদ্র কৃষকেরা উপকৃত হবে।’
কৃষক মনসুর আলম জানান, আমার মত অনেক কৃষকের এই বিলে অনেক জমি অনাবাদি রয়েছে। আগামিতে আবাদ করার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। কিন্ত এত জমির কচুরিপানা নিজেদের উদ্যোগে অপসারণ করা সম্ভব নয়। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কৃষকের অনাবাদী জমি আবাদে পরিণত করতে সরকারী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য আবেদন করছি।’
এ ব্যাপারে গৌরীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মাষ্টার বলেন, ঘুঘুদহ বড়বিলের অনাবাদি জমির কচুরিপানা ও আগাছা নিধনের জন্য কৃষকদের নিজ উদ্যোগে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। এ কাজের উদ্বোধন করার জন্য আমাকে অতিথি করায় কৃষকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবেনা সেজন্য কৃষকদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন,‘কচুরিপানা অপসারণের জন্য ওই এলাকার কৃষকেরা আমার দপ্তরে এসেছিল। তাদেরকে বলা হয়েছে কচুরিপানা অপসারনের জন্য সরকারিভাবে আমাদের কাছে কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। কৃষকদের ব্যক্তিগত ও সমন্বিতভাবে কচুরিপানা পরিস্কার করতে হবে। তবে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে কাজটা শুরু করা জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া সরকারীভাবে অপসারণের জন্য উর্ধবতন কর্তপক্ষকে বিষয়টি আমি অবহিত করবো’।